নারী ও পুরুষ আলিঙ্গন ও
চুম্বনের দ্বারা রতি ক্রিয়ায় যথেষ্ট উৎসাহী হয় ও তাতে অনুরাগ বৃদ্ধি হয়। এখন এই
দুটি প্রক্রিয়া ছাড়া আরও বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে যা
রতিক্রিয়ার আগে দুজনের মধ্যে যথেষ্ট আনন্দ ও উল্লাস সঞ্চার করতে পারে। এগুলি হল
নখাঘাত বা নখচ্ছেদ, দংশনচ্ছেদ বা দংশন ইত্যাদি।
কখন
নখাঘাতের প্রয়োজন
নখাঘাত কখন কখন প্রয়োজন
সে বিষয়ে এবারে বেশ ভালভাবে আলোচনা করা হচ্ছে। নিম্নলিখিত সময় নখাঘাত করা প্রয়োজন-
১। সুরতের জন্য প্রথম মিলনে।
২। অনেকদিন পর পুরুষ বা নারী ফিরে এলে যে প্রবল মিলনেচ্ছা জাগে সে সময়।
৩। দীর্ঘ প্রবাস যাত্রার আগে।
৪। প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে কেউ কেউ ক্রুদ্ধ হলে।
৫। মদ্যপান করে নারী অত্যন্ত কাম বিহ্বল হয়ে পড়লে।
৬। ব্যাক্তিগত ইচ্ছা।
যারা কামক্রিয়া করতে
অত্যন্ত উত্তেজিত হয় তারা এ কাজ করতে পারে। নখাঘাতের পরই কামুক ব্যাক্তিরা মিলনের
সময় দংশন করে।
বিভিন্ন
প্রকার নখাঘাত
বাৎস্যায়ন নখাঘাতকে
কতকগুলি বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে তা বর্ণনা করেছেন। সে বিষয়ে এবারে একে একে আলোচনা
করা হচ্ছে।
অঙ্কুরিত
নখাঘাত
যে পুরুষের নখ মাঝারি
রকমের তারা নারীর চোয়ালে, অধরে বা স্তনাগ্রে নখ রেখে এসব
স্থানে একটু ধীরে ধীরে চাপ দিতে পারে। তাতে নারীর অঙ্গে ব্যাথা লাগে না বরং এতে আনন্দকর ঝিনঝিনি লাগে, ঐ
বিশেষ স্থানে বা সারা গায়ে কাঁটা দেয়, এতে নারীর কামোদ্রক
তীব্র হয়। নারীর যে সব স্থান খুব কোমল সেখানেই এটি করা যায়। অনেক সময় কাম কলহের
সময় এটি করা হয়।
অর্ধচন্দ্র নখাঘাত
এতে নখগুলি বাঁকা ও খুব
ধারালো হয়, নারীর যৌনাঙ্গ এবং স্তনে এর দ্বারা আঘাত দেওয়া হয়। এতে খানিকটা দাগ হতে পারে।
বৃত্তাকার
নখাঘাত
যদি দুটি অর্ধবৃত্তাকার
আঘাত পরস্পর মুখোমুখি হয় তখন তা সম্পূর্ণ অঙ্কিত করে। এটি শরীরের যে কোন অংশে, বিশেষ
করে কোমরে, নিতম্বে, নাভির তলায়
হতে পারে।
সমরেখ
নখাঘাত
এটি শরীরের যে
কোনও স্থানেই ঘটতে পারে। সমান রেখায় একবার সামনে একবার পেছনে এইভাবে নখাঘাত ঘটে
থাকে।
ব্যাঘ্র
থাবা নখাঘাত
যখন নখাঘাত স্তনবৃন্তের
উপর বাঁকা রেখায় অঙ্কিত হয়, ব্যাঘ্র থাবার মত দেখতে হয়, এটি সজোরে হতে পারে।
ময়ুর পদ
নখাঘাত
যখন পুরুষের পাঁচটি
আঙ্গুল স্তনে আঘাত করে বৃন্তে মিলিত হয়, আবার
পিছিয়ে যায়, তখন তা দেখতে ঠিক ময়ুরের পায়ের চিহ্নের মত হয়, তাই এই নামকরণ।
লম্ফমান
হরিণ আঘাত
প্রথমে নারীর স্তনে নখাঘাত করা হয়, তারপর স্তনাগ্রে বা
বক্ষে করা হয়। এইভাবে তা যখন খুব জোরে চাপ দেয়, তখন নারী ও পুরুষের কাম উত্তেজনা বাড়তে থাকে তখন তাকে এই নাম দেওয়া হয়।
পদ্মপাতা
আঘাত
যখন স্তনাগ্রে নখের
আঘাত,
নিতম্বের আঘাত, কোমরের আঘাত, উরু ও জঙ্ঘের আঘাত, এই
পাঁচটি যখন একসঙ্গে থাকে তখন তা দেখতে পদ্মপাতার মত হয়। তখন তাকে এই নাম দেওয়া হয়।
স্মারক
নখাঘাত
যখন কোন পুরুষ বিদেশ
যাত্রার আগে তার প্রিয়া নারীকে তিন চারটি স্থানে জোরে জোরে নখাঘাত করে, তখন
তাকে বলে স্মারক নখাঘাত। এর অর্থ হল, আমি যে নখাঘাত করলাম
তা তোমাকে যেন আমার কথা বার বার স্মরণ করিয়ে দিতে থাকে।
নারীদেহের
বিভিন্ন নখাঘাতের স্থান
নারীদের নিম্নলিখিত
স্থানগুলিতে নখাঘাত হয়ে থাকে। তা হল-
১। বগল।
২। নারীর স্তন।
৩। ঘাড় ও কাঁধ।
৪। পৃষ্ঠ দেশের সর্বত্র।
৫। নিতম্ব।
৬। উরুদ্বয়ের সংযোগ স্থান।
৭। যোনি স্থান।
৮। গলা।
কিন্তু সুবর্ণাভ বলেন, নারী
পুরুষ কামে উন্মত্ত হয়ে উঠলে তখন কোনও স্থান জ্ঞান থাকে না, তখন যে কোন স্থানে নখাঘাত করা যায়।
নখের
আকৃতি
কামোন্মত্ত পুরুষের
নখের আকৃতি খুব লম্বা হয়। সেগুলি করাতের মত ধারালো হয়, দু-একটি জায়গায় কাটা দাগও থাকতে পারে। কিন্তু যারা বেশি কামোন্মত্ত নয়
তাদের নখ অর্ধচন্দ্রাকার হয়ে থাকে। তাদের নখ ভোঁতা হয়, ধারালো
হয় না।
উৎকৃষ্ট
নখ
বাৎস্যায়নের মতে
নিম্নলিখিত নখগুলি খুব উৎকৃষ্ট প্রকৃতির হয়ে থাকে।
১। যাদের নখে সবুজ বা কালো দাগ নেই।
২। নখের উপরিভাগ সমতল।
৩। উজ্জ্বল নখ।
৪। পরিষ্কার নখ।
৫। খুব চওড়া নখ।
৬। যেগুলি শীঘ্র গজায় বা বাড়ে।
৭। খুব নরম নখ।
৮। বেশ চকচকে নখ।
বাৎস্যায়ন আরও বলেছেন, যারা
বেশি নখাঘাত করতে পারে, রতিকালে তারা নারীদের কাছে বেশি
আদরনীয় হয়। যে সব নারী স্বামীর অজ্ঞাতে প্রেম করে, তারা
যাতে শরীরে নখাঘাত না পায় তা দেখা কর্তব্য। তরুণী নারীদের নখাঘাত
করা উচিত নয়, কারণ তাতে ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। নখাঘাতের চিহ্ন
ও দংশনাঘাতের চিহ্ন মানুষের কাম বাসনাকে প্রবল করে তোলে, এ
কথা কামশাস্ত্রকাররা বলেছেন।