মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

দংশন বা দংশনচ্ছেদ ও দেশাচার

যখন নারী পুরুষের কাম খুব চূড়ান্ত স্তরে, তখন তারা শুধু নখাঘাত করেই তৃপ্ত থাকে না, সেই সঙ্গে তারা দংশনও করে থাকে। স্নায়ুর উত্তেজনা খুব বেশী হলেই মানুষ দংশন করে, তা ছাড়া করে না। কপাল, অধর, ঘাড়, গলা, বুক, স্তন, নিতম্ব, উরুদ্বয় ও যোনিদেশে দংশন করতে পারে।

দাঁতের গুণাবলী

দাঁত দিয়ে দংশন করে প্রেম চরিতার্থ করতে গেলে দাঁতের কতগুলি গুণ থাকা উচিত। তা হল-

১। দাঁতগুলি এক পংক্তিতে থাকবে

২। পরিষ্কার ও উজ্জ্বল হবে।

৩। পান খেলে যেন সহজেই তা রক্তিম হয়ে পড়ে।

৪। আকৃতি যেন ভাল হয়, খুব বড় বা ছোট না হয়।

৫। বেশ সাজানো থাকবে।

৬। একটু তীক্ষ্ণ ধার হবে।

কিন্তু দাঁত বড় বা ছোট, এক পংক্তিতে নয় বা দেখতে কদাকার, দাঁত নষ্ট হয়েছে, পোকায় খাওয়া, মুখে দুর্গন্ধ বের হয়, এমন থাকলে কখনও প্রিয়াকে দংশন করা উচিত নয়।

দন্ত দংশনের প্রকারভেদ

সাধারণত দন্ত দংশন আট প্রকারের হতে পারে। এবারে তা একে একে আলোচনা করা হচ্ছে।

গূঢ় দংশন

যখন দংশিত স্থানে অল্প পরিমাণে দাঁতের চাপ দেওয়া হয়, তখন তাকে গূঢ় দংশন বলা হয়ে থাকে।

স্ফীত দংশন

যখন একটু জোরে দংশন করা হয় এবং তার ফলে দংশিত স্থান ফুলে ওঠে তখন তাকে বলে স্ফীত দংশন।

বিন্দুমালা দংশন

নিচের সামনে দাঁত ও ঠোঁটের দ্বারা এমনভাবে দংশন করা হয় যে, সবগুলি দাঁতের দাগ দেখা যায়, তখন তাকে বলে বিন্দুমালা দংশন।

প্রবালমণি দংশন

যখন অধর ও ওপরের দাঁতগুলি দিয়ে দংশন করা হয়, তখন সেখানে ছোট একটি লাল দাগ হয়, দেখতে ঠিক প্রবালের মত, তাই এই নাম।

প্রবাল মালা দংশন

যখন অনেকগুলি প্রবাল দংশন পাশাপাশি হয়ে একটি প্রবালের মালার মত দেখায়, তখন তাকে বলা হয় প্রবাল মালা দংশন।

ভগ্নমেঘ দংশন

যখন মুখ দিয়ে স্তন নিপীড়ন করে মাঝে মাঝে দংশন করা হয়, তখন ছোট বড়, ভিন্ন ভিন্ন নানা আকৃতির দাগ হয়, তা দেখতে ছিন্ন মেঘের মত, তাই এই নাম দেওয়া হয়েছে

বরাহ চর্বিক দংশন

যখন নারীর দেহের কিছুটা স্থান মুখে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে চর্বণ করা হয় এবং তারপর আবার অন্য অংশ এই ভাবে চর্বণ করা হয় তখন তাকে শূকর চর্বণ বা বরাহ চর্বিক দংশন বলে।

শেষ দুটি দংশন অবশ্য কাম খুব প্রকটিত হলে করা হয়, তা না হলে হয় না।

ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন কামক্রিয়া

বাৎস্যায়ন বলেন, যে দেশে যেমন কামক্রিয়ার প্রথা চালু আছে, সেই প্রথা অনুযায়ী নারীর সঙ্গে সহবাস করা পুরুষের উচিত, আবার নারীরও উচিত পুরুষের নিজ দেশে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রথা অনুসরণ করে চলা তিনি বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন।

মধ্যপ্রদেশের অধিবাসীরা সুনীতির সঙ্গে সঙ্গম করে। নারীরাও খুব স্বাভাবিক সঙ্গম চায়, আঁচড়ানো, কামড়ানো ইত্যাদি পছন্দ করে না। তারা ওগুলি অসভ্য কাজ বলে মনে করে।

বাহলীক ও অবন্তী দেশের (উত্তরপ্রদেশ) নারীরা চুম্বন, দংশন ইত্যাদির কার্য্য পছন্দ করে কিন্তু রতিক্রিয়ায় নিত্য নূতন নায়ককে বেশী পছন্দ করে।

কুরুক্ষেত্র, পূর্ব মালব প্রভৃতি দেশের নারীরা আলিঙ্গন, চুম্বন, দংশন ইত্যাদি খুব ভালোবাসে কিন্তু কোন ক্ষত চিহ্ন রাখতে চায় না।

কঙ্কন ও গুজরাটের নারীরা অত্যন্ত কাম প্রব ও প্রচুর পরিমাণে উপাচার পছন্দ করে। প্রসাধন এদের অতি প্রিয় জিনিস।

পাঞ্চাব ও সিন্ধু প্রদেশের নারীরা খুবই কামুক হয়, তারা যোনিদেশে পুরুষের পুরুষাঙ্গ আমূল প্রবেশ অত্যন্ত পছন্দ করে। এমন কি পায়ু প্রদেশেও লিঙ্গ প্রবেশ করিয়ে আনন্দ পায়। আচড়ানো, কামড়ানো, নিপীড়ন সবই তারা খুব ভালোবাসেএমন কি একাধিক পুরুষকেও মাঝে মাঝে চায়।

অন্ধ্রপ্রদেশের নারীরা বড় কোমলমনা। তারা শুধু চুম্বন ও মিলন চায়। অন্যান্য উপাচারগুলি তারা মোটেই ভালোবাসে না কিন্তু পুনঃ পুনঃ মিলন তারা পছন্দ করে।

মহারাষ্ট্রের নারীরা সহবাসকালে স্তনমর্দন, চুম্বন, দংশন ইত্যাদি কাম পরিচর্যায় বড় চতুরা হয়, তারা সহবাসকালে নানা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী ও বাক্যালাপ পছন্দ করে। যে পুরুষ এসব বেশী করতে পারবে সে মেয়েদের তত ভালোবাসা পাবে। তারা বিহার অর্থাৎ পুরুষের উপরে উঠে বিহার সঙ্গম বেশ পছন্দ করে।

পাটনার নারীরা যদিও খুব বেশি কামুক, তবে একটু লাজুক।

দ্রাবিড় দেশের নারীরা সামান্য চুম্বন বা আলিঙ্গনেই খুব দ্রুত উত্তেজিত হয় ও সঙ্গম কামনা করে। তাদের যোনিও খুব দ্রুত সিক্ত হয়ে ওঠে।

উত্তরবঙ্গের নারীরা কোমল আকৃতির। তারা হয়ত অশ্লীল কথা বলা, বেশি কঠিন উপাচার পছন্দ করে না।

পূর্ব কঙ্কন অঞ্চলের নারীরাও খুব লাজুক ও নরম স্বভাবের। তারা সজোরে চুম্বন পছন্দ করে কিন্তু সামান্য উপাচার চায় না। তারা প্রতি রাত্রে একবার সঙ্গম চায়, তার বেশী নয়।

বাৎস্যায়ন বলেছেন, বিবাহ বা মিলনকালে এইসব কথা মনে রেখে কামতৃপ্তি ও উপাচার স্থির করা অবশ্যই উচিত।