সম্ভোগের
আগে স্বামীর কর্তৃব্য
১। পতির কর্তব্য হল, পত্নীকে প্রিয়তমা জ্ঞানে বা সত্যিকারের ধর্মপত্নী জ্ঞানে নিজের তৃপ্তির সঙ্গে সঙ্গে তারও দৈহিক ও মানসিক তৃপ্তি বিধান করা। নিজের কামনা পরিতৃপ্ত করাই সম্ভোগের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
২। কোন প্রকার বল প্রয়োগ করা আদৌ বাঞ্ছনীয় নয়, একথা মনে রাখতে হবে।
৩। চুম্বন, আলিঙ্গন, নিপীড়ন ইত্যাদি নানাভাবে স্ত্রীর মনে পূর্ণ কামোত্তেজনা জাগিয়ে তারপর তার সঙ্গে সহবাসে রত হওয়া প্রতিটি পুরুষের কর্তব্য।
৪। নারী ধীরে ধীরে আত্নসমর্পণ না করা পর্যন্ত তার সঙ্গে কখনও সহবাসে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।
৫। নারী কখনও নিজের যৌন উত্তেজনাকে মুখে প্রকাশ করে না, তবে সেটা অনেকটা লক্ষণ দেখে বুঝে নিতে হয়।
৬। নারীর কর্তৃব্য সর্বদা পতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ভাব ফুটিয়ে তোলা।
৭। পতিকে ঘৃণা করা, তাকে নানা কুকথা ইত্যাদি বলা কখনই উচিত নয়। সহবাসের অনিচ্ছা থাকলে তা তাকে বুঝিয়ে বলা উচিত। ঘৃণা বা বিরক্তিসূচক তিরস্কার করা কখনও উচিত নয়। এতে পতির মনে দুঃখ ও বিরক্তি জাগতে পারে।
৮। নারীর কর্তৃব্য স্বামীর চুম্বন, দংশন ও আলিঙ্গনের প্রতুত্তর দেওয়া।
৯। নারীর পূর্ণ কামভাব জাগলে পতিকে কৌশলে তা বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।
১০। নারীর উত্তেজনা ধীরে ধীরে আসে আবার তা ধীরে ধীরে তৃপ্ত হয়। পুরুষের উত্তেজনা আসে অকস্মাৎ আবার তা অকস্মাৎ শেষ হয়। তাই নারীর পূর্ণ কামভাব না জাগিয়ে সঙ্গমে মিলিত হলে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পেতে পারে না। এরকম করা বিধিবিরুদ্ধৃ। এতে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পায় না, এর জন্য সে পরপুরুষ পর্যন্ত গমন করতে পারে। দাম্পত্য জীবনে অনেক বিপর্যয় এর জন্য আসতে পারে।
স্ত্রীকে
দ্রুত তৃপ্তির উপায়
১। গালে, ঠোঁটে ঘন ঘন চুম্বন করা।
২। মৈথুনের আগে স্ত্রীর ঊরুদেশ জোরে জোরে ঘর্ষণ করা।
৩। সম্ভোগের আগে যোনিদেশ, ভগাঙ্কুর কামাদ্রি আলতো ভাবে ঘর্ষণ করা।
৪। ভগাঙ্কুর মর্দন।
৫। মৈথুনকালে স্তন মর্দন।
৬। সহাবাসের আগে যদি পুরুষাঙ্গের আগায় খুব সামান্য পরিমাণ কর্পূর লাগানো হয় তবে স্ত্রী দ্রুত তৃপ্তি লাভ করে থাকে। তবে কর্পূর যেন বেশি না হয়, তাতে স্ত্রী যোনি ও পুরুষাঙ্গ জ্বলন অনুভূত হতে পারে।
সহবাসের
কাল
১। মেয়েদের একটু ঘুমোবার পর রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর শ্রেষ্ঠ মৈথুন সময়।
২। দিনের বেলা সহবাস নিষিদ্ধ।
৩। ভোরবেলা সহবাস শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।
৪। গুরু ভোজনের পর সঙ্গে সঙ্গে সহবাস নিষিদ্ধ।
৫। ক্রুদ্ধ বা চিন্তিত মেজাজে স্ত্রী সহবাস উচিত নয়, প্রফুল্ল মনে সহবাস উচিত।
কোন ঋতু মৈথুনের পক্ষে
কতটা উপযোগী তার বিচার করা হচ্ছে।
ক। বসন্তকাল - ৯০%।
খ। শরৎকাল - ৭০%।
গ। বর্ষাকাল - ৫০%।
ঘ। হেমন্তকাল - ৪০%।
ঙ। গ্রীষ্মকাল - ৩০%।
চ। শীতকাল - ২০%।
প্রহরণ
বা মৃদু প্রহার
মৈথুনকালে মৃদু প্রহার শৃঙ্গারও
কামের একটি অঙ্গ হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। কথাটা শুনতে অনেকটা আশ্চার্য্য বোধ হয় কিন্তু
কামসূত্রে তার ব্যাখ্যা প্রদত্ত হয়েছে। নারী কিছুটা উৎপীড়িত হতে চায় যৌন মিলনে, তাই
মনোবিজ্ঞান স্বীকার করে যে পুরুষ কিছুটা উৎপীড়ন করতে পারে নারীকে। কিন্তু প্রহরণ
ঠিক শৃঙ্গার নয়, কারণ মিলনের আগে এর প্রয়োজন নেই। পূর্ণ
মিলনের সময় আনন্দ বৃদ্ধির জন্য পুরুষ ধীরে ধীরে নারীদেহের কোমল অংশে মৃদু প্রহার
করতে পারে।
পুরুষ অত্যাচারী, মনোবিজ্ঞানের
মতে যে প্রহার করা হয় তা আনন্দের। তা বলে এতে দুজনই যে
আনন্দ পাবে এমন নয়। এটা দুজনের মানসিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। প্রহরণের মধ্যে
আবার প্রকারভেদ আছে-
১। মুষ্টি প্রহার - হাত মুষ্টি বদ্ধ করে দেহের বিভিন্ন অংশে মৃদু প্রহরণ।
২। চপেটাঘাত - হাত খুলে রেখে ধীরে ধীরে।
৩। দুটি অঙ্গুলির সাহায্যে প্রহরণ।
৪। প্রহরণ ও সংবহন মিশ্রিত করে প্রহরণ।
মর্দন বা
সংবাহন
যদিও মর্দন শৃঙ্গার
কালে মাঝে মাঝে হয়, তবে এই মর্দন প্রকৃত শৃঙ্গার নয়। মর্দন বেশি হয় রতিকালে
বা রতির পূর্বে। নারীদেরহর কোমল অংশে যেমন স্তন, নিতম্ব,
ঊরুদ্বয় প্রভৃতির মর্দন হয়ে থাকে। রতিক্রিয়াকালে স্তন ও নিতম্ব
মর্দন করেও পুরুষ ও নারী উভয়ে আনন্দ পায় বলে বাৎস্যায়ন বলেছেন। তবে যারা পছন্দ করে
তারাই এটা করবে। যদি একজন বা দুজনই পছন্দ না করে তবে এর প্রয়োজন নেই।
ঔপরিষ্ঠক
বা মুখমেহন
মুখমেহন স্বাভাবিক মিলন
হিসাবে বাৎস্যায়ন স্বীকার করেন নি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এটি সর্বদা চলতে পারে না। তবুও শাস্ত্রে এটি উল্লিখিত হয়েছে। শাস্ত্রে উল্লিখিত হবার
অর্থ অবশ্য এই নয় যে এটি খুব ভাল আসন বা এটি সম্মান পেয়েছে। শাস্ত্রে কেবল এটাকে
একটি অস্বাভাবিক মিলন বলেই এর নাম উল্লিখিত হয়েছে। ভারতের কোন কোন জাতির মধ্যে
ঔপরিষ্ঠক স্বীকৃত ও বেশ প্রচলিত কিন্তু তাই বলে তাকে উচ্চ স্থান দেওয়া হয় না। মুখমেহন
সব পণ্ডিতের মতেই ঘৃন্য তাই এ বিষয়ে বেশি আলোচনা করা হল না।
বাৎস্যায়ন বলেন,
নারী শুধু তিনটি শ্রেণীরই নয়, তাছাড়াও আছে আর এক শ্রেণী,
তার নাম হল নপুংষক শ্রেণী। এই নপুংষক শ্রেণীর যোনি ঠিকমত গঠিত নয়,
তাই এদের সঙ্গে যৌন ক্রিয়া সম্ভব নয়। এদের দ্বারা কেবল মুখমেহন
করানো চলতে পারে। এই শ্রেণীর নপুংষক অনেক সময় অর্থের বিনিময়ে মুখমেহনে রাজী হয়। এই
মুখমেহন আট প্রকার হয়ে থাকে-
১। নিমিত - এতে নপুংষক তার করতলে পুরুষাঙ্গ ধরে এসে এসে তার ওষ্ঠাধারে ঘর্ষণ করে।
২। পার্শ্ব - লিঙ্গ মুণ্ডের আবরণ খুলে এসে এসে মুখে প্রবেশ করানো।
৩। বহিঃসংদংশন্ত - দাঁত ও ঠোঁট দিয়ে পুরুষাঙ্গের আবরণ উন্মোচন।
৪। পুরুষাঙ্গ বারে বারে মুখের ভেতরে নেওয়া ও বের করা, বহুক্ষণ এরূপ করা।
৫। অন্তঃসংদংশন – ওষ্ঠাধর দিয়ে চোষণ করা।
৬। জিহ্বা দ্বারা চোষণ।
৭। আম্রচোষণ - পুরুষাঙ্গ আম্রের মত চোষণ করা।
৮। আকন্ঠীত - সম্পূর্ণ পুরুষাঙ্গ গিলে ফেলার মত।
মুখের মধ্যে সুরতের
সঙ্গে সঙ্গে আলিঙ্গনাদিও চলতে পারে। অনেক নীচজাতীয়া নারীদের দ্বারা এ কাজ করানো যেতে
পারে। কামশাস্ত্রে মুখে সুরত নিষিদ্ধ। তবে অনেকে এটি পছন্দ করে বা কোন রাবাঙ্গনা
রাজী হলে তার দ্বারা এটি করায় কিন্তু অন্তঃপুর চারিনীদের
এটি করা উচিত নয়।
সহবাসের
পরের কথা
সহবাসের পর দুজনেরই
উচিত কমপক্ষে এক পোয়া গরম দুধ, একরতি কেশন ও দুই তোলা
মিশ্রি সংযোগে সেবন করা। সহবাসে কিছু শক্তির হ্রাস হতে পারে, এতে করে কিঞ্চিৎ পূরণ হয়, অন্যথায় সহবাস করা
উচিত নয়। এই কারণেই মনীষীরা মাসানে একবার রতিক্রিয়ার ব্যবস্থা করে দেন যাতে উপরোক্ত সামগ্রীর যোগাড় করতে গরীব বা মধ্যবিত্ত
শ্রেণীর লোকের পক্ষেও কষ্টকর না হয়।
পুষ্টিকর খাদ্য না খেলে
পুরুষ অচিরেই শক্তিহীন হয়ে পড়ে ও তার কর্মশক্তি লোপ পায়। অত্যধিক মৈথুনের জন্য
হজমশক্তি লোপ পায়। ফলে অম্ল, অজীর্ণ প্রভৃতি নানা প্রকার
রোগ দেখা দেয়। এই সমস্ত রোগের হাত থেকে নিশ্চিত ভাবে নিষ্কৃতির জন্য মৈথুনের পর দুগ্ধ পান অত্যাবশ্যক। অবস্থায় সম্ভব হলে নিম্নের
টোটকাগুলি ব্যবহার করলে ভয়ের কারণ থাকবে না।
১) বাদাম দুই তোলা ভালভাবে বেটে নিয়ে তা মিশ্রি সংযোগে মৈথুনের পর গরম করে খেলে বিশেষ উপকার হয়।
২) দুতোলা ঘি, দু তোলা মিশ্রি কিংবা গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করলে সহজে ক্ষয় পূরণ হয়।
৩) মুগের ডাল ভাল ভাবে বেটে নিয়ে ভেজে নিয়ে, পরে মিশ্রি কিংবা চিনি মিশিয়ে নাড়ার মত করে চার তোলার মত মৈথুনের পর খেয়ে নিলে উপকার হয়।
সহবাসের সঙ্গে সঙ্গে
পুরুষাঙ্গ ধৌত করলে নপুংষকতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেজন্য রতিক্রিয়ার কিছু সময় পর
পুরুষাঙ্গ ধৌত করা বিধেয়। এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রত্যেকের উচিত। সহবাসের পর
দেহের বিষয়ে কি কি যত্ন নিতে হবে এ বিষয়ে শাস্ত্রে কতগুলি নিয়ম বিধিবন্ধ আছে। আমরা
তা একে একে আলোচনা করছি।
১। সহবাসের পর দুজনে কিছুক্ষণ পরস্পর সংলগ্ন হয়ে অবস্থান করবে, এতে মানসিক তৃপ্তি হয়, ধীরে ধীরে দেহ শীতল হয়, এতে প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
২। তারপর অবশ্য প্রত্যেকেই নিজ নিজ যৌনাঙ্গ ভাল ভাবে ধৌত করবে, এটি অবশ্য পালনীয় তবে কিছুক্ষণ পর।
৩। অনেক শাস্ত্রে দুজনের স্নান করা বিধান আছে তবে তা সবাই পালন করে না।
৪। শর্করা মিশ্রিত এক গ্লাস জল কিঞ্চিৎ লেবুর রস বা দই কিংবা শুধু ঠাণ্ডা জল কিছু খেতে হবে, এতে শরীরের মঙ্গল হয়।
৫। প্রয়োজন হলে কোন পেটেন্ট ঔষধ সেবন করা যেতে পারে।
৬। সহবাসের পর ঘুম একান্ত আবশ্যক, তাই শেষ রাতে সহবাস বাঞ্ছনীয় নয়।
৭। পরদিন প্রভাতে স্নান করা একান্ত আবশ্যক। তা না হলে মন শুচি হয় না, কর্মে প্রফুল্লতা আসে না। অন্যথায় পরদিন মন খারাপ থাকে, কর্মে একঘেয়েমি আসতে পারে।
৮। সহবাস প্রারম্ভে বা শেষে নেশা সেবন ভাল নয়। এতে দৈহিক ক্ষতি হয়, প্রেম দূরে যায়, মানসিক অষাঢ়তা আসতে পারে।
৯। রাত্রির প্রথম ও শেষ প্রহর বাদে মধ্যম অংশই সহবাসের পক্ষে উৎকৃষ্ঠ সময়, এ কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে।
১০। সহবাসের পর অধিক রাত্রি জাগরণ, অধ্যয়ন, শোক প্রকাশ, কলহ, কোন দুরূহ বিষয় নিয়ে গভীর চিন্তা ও মানসিক কোন উত্তেজনা ভাল নয়।
সফল
মৈথুন
এবার আমরা একটি
প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করব তা হল সফল মৈথুন। এমন প্রশ্ন
অনেকে করতে পারে, মৈথুন আবার সফল অসফল হয় কি? যথারীতি নর-নারীর মিলন, দৈহিক মিলনের পরিপূর্ণ
আনন্দ ও রেতঃপাত, এই ত মৈথুন। আমরা বলব না, তা নয়। তবে? আমরা বলব শতকরা একটি কি দুটির
বেশি মৈথুন সফল মৈথুন হয় না। কেন হয় না? তা বলতে গেলে সফল
মৈথুন কি, সে বিষয়ে আলোচনা করতে হয়। স্ত্রীর কামনার
তৃপ্তি কম বেশি হয়ত হয়ে থাকে তথাপি স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে সন্তানের জন্মও দিতে শুরু
করে, তবুও তা সফল মৈথুন হয় না। কেন? এর উত্তর হল শৈথুন বা রেতঃপাত অনেকেই করে থাকেন কিন্তু সফল মৈথুন খুব
অল্প জনের ভাগ্যেই ঘটে থাকে। এবার সে বিষয়ে আলোচনা করব।
সফল
মৈথুনের পরিচয়
যে মৈথুন করলে শারীরিক, মানসিক
ও দৈহিক কোনও ক্ষতি হয় না। উলটে কর্মে আনন্দ ও একাগ্রতা আসে এবং মৈথুনের প্রতি আকর্ষণ
বৃদ্ধি পায়, স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং হৃদয়
প্রফুল্ল ও শান্ত, স্নিগ্ধতায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তাকে সফল মৈথুন বলে।
সফল
মৈথুনের ফল
১। মনে শান্তি পায়, মন সর্বকাজে দৃঢ় হয়ে থাকে ও মনের উৎসাহ বাড়ে।
২। কাজকর্মে একাগ্রতা আনে, কাজকর্মের দিকে মন সংযোগ বৃদ্ধি পায়।
৩। দৈহিক ও মানসিক তৃপ্তির জন্য কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, নিজেকে গর্ব অনুভব করে।
৪। স্ত্রীর প্রতি প্রেম বৃদ্ধি পায় ও স্ত্রীকে প্রকৃত ভালোবাসতে পারে, স্ত্রীর আকর্ষণ আসে স্বামীর প্রতি।
৫। অন্য নারীর প্রতি আকর্ষণ থাকে না।
অসফল
মৈথুনের ফল
১। মনে শান্তি থাকে না, মন ধীরে ধীরে অবসাদে ভরে ওঠে, মেজাজ হয়ে যায় খিটখিটে।
২। সব সময় মন উত্তেজিত ও বিরক্ত থাকে।
৩। মানসিক দুর্বলতা, প্রযুক্ত কাজকর্মে ইচ্ছা কমে যায়।
৪। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা কমে আসে।
৫। পরনারীর প্রতি আকর্ষণজনিত চরিত্রদোষ ঘটতে পারে, পতিতা গমনও ঘটতে পারে।
৬। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে, সব সময় শরীর ভার ভার বোধ হয়, আহার ও নিদ্রার প্রতিও আকর্ষণ কমে যায়।
৭। বায়ুর প্রাবল্য, চোখ মুখ জ্বালা করতে থাকে।
৮। মাথা ঘোরে ও গা বমি বমি করে।
৯। ধীরে ধীরে মৈথুনের প্রতি ঘৃণাও জন্মাতে পারে।
এখন কথা হচ্ছে কি করলে
মৈথুন সফল করা যায়। মৈথুন অসফল হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে উপযুক্ত পুরুষ ও নারীর
মিলনের অভাব।
অসফল
মৈথুনের কারণ
এবারে অসফল মৈথুনের
কতকগুলি প্রধান কারণের বিষয় লেখা হচ্ছে, এগুলিও মনে মনে চিন্তা ও
বিচার করে নিতে হবে।
১। মৈথুনের আগে নারীকে উত্তেজিত না করা।
২। মৈথুনে যোগ্যভাবে নিজেকে তৈরী না করা।
৩। উপযুক্ত আসন না করে মৈথুনে লিপ্ত হওয়া।
৪। শক্তির অভাবে মৈথুন পূর্ণ হতে পারে না।
৫। অসুস্থ অবস্থায় মৈথুন, এতে তত পূর্ণ আনন্দ হয় না, দৈহিক ক্ষতি করে।
৬। ঘন ঘন মৈথুন, এটি অবশ্য পরিত্যাজ্য, ইহা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
৭। অযোগ্য স্ত্রী, স্ত্রী উপযুক্ত না হলে পূর্ণ মৈথুন হয় না।
৮। অন্যান্য অসুবিধা বা মানসিক কারণ।
৯। স্বামী বা স্ত্রীর অন্য নারী বা পুরুষের প্রতি গোপন আসক্তি।
১০। প্রকৃত উত্তেজনা ছাড়া মৈথুন।
উত্তেজনার
বিচার
এবার প্রকৃত উত্তেজনা
কি ও কি তার লক্ষণ সে বিষয়ে বলা হচ্ছে। উত্তেজনা দুই প্রকার-
১) আসল।
২) নকল বা বাহ্যিক।
যে যৌন উত্তেজনা
সাধারণত নর-নারীর মধ্যে দেখা যায় তা প্রায়ই নকল উত্তেজনা। নকল কেন তার প্রমাণ করে
দেওয়া হবে, আগে আসল উত্তেজনার লক্ষণ কি তাই বলা হচ্ছে।
নারী পুরুষকে বা পুরুষ
নারীকে কাছে টেনে নিয়ে পরস্পর উত্তেজনা সৃষ্টির প্রয়াস পায় এবং তার ফলে যদি হৃদয়ে
উত্তেজনা জাগে তা প্রকৃত উত্তেজনা নয়। হৃদয়ে আপনা থেকেই ভাবভঙ্গীর মুখে পরস্পরের
সঙ্গে মিলিত হবার দুর্দমনীয় কামনা যদি জাগে তবে তা হল আসল অর্থাৎ প্রকৃত উত্তেজনা।
প্রকৃত উত্তেজনা
সম্বন্ধে বাৎস্যায়ন বলেছেন, যদি কোন নারীর স্মৃতি
(চেহারা) বা ধ্যান ছাড়াও আপনা থেকেই হৃদয় উত্তেজিত হয়ে উঠে, তবে তা হল প্রকৃত উত্তেজনা। কিন্তু এ হল সেই যুগের কথা, মানুষ যখন প্রকৃতির উপর নির্ভর করে চলত। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে সে নিজের মানসিক অবস্থা
নিরূপণ করত। আজকাল যুগ পালটে গেছে। নারী মূর্তি দর্শন আজকাল হামেশাই করতে হয়। হাটে বাজারে
চারপাশে নারীর নানা ভঙ্গির নানা ছবি নানা বিজ্ঞাপন। নারীর দেহ আর যৌবনের নানারূপ
ভঙ্গিমার বিজ্ঞাপন দিয়েই আজকাল প্রচুর জিনিস বিক্রি হয়। সাইনবোর্ডেও নারীর নানারূপ
প্রতিকৃতি দেখা যায়। তবে আজকাল সেভাবে প্রকৃত উত্তেজনা বোঝা সহজ কথা নয়। প্রকৃত
উত্তেজনা তাই আজকাল অন্যভাবে স্থির করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যখন চিত্তবৃত্তি আপনা
থেকেই নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং মনকে কিছুতেই আর সংযত করা যায় না, তখনই
প্রকৃত উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং তাকেই প্রকৃত উত্তেজনা বলে।
এ কথা ঠিক যে প্রকৃত উত্তেজনা
ছাড়া মৈথুন করা উচিত নয়। তেমনি প্রকৃত উত্তেজনা জাগলে তা দমন করাও ঠিক নয়। তাতে
দৈহিক ও মানসিন ক্ষতি হতে পারে। প্রকৃত উত্তেজনার সময় ব্যতীত মৈথুন করলে তা মৈথুন
হতে পারে না।
মৈথুনে
শক্তির স্বল্পতা
মৈথুনে শক্তির স্বল্পতা আর শীঘ্র রেতঃপাত
করা একই কথা, কিন্তু দুটির কারণ কিছুটা ভিন্ন। শীঘ্র বীর্য পতন এক ধরণের রোগ। এ
বিষয়ে আমরা এর পরে রোগের পরিচ্ছেদে বিশেষভাবে আলোচনা করব। কিন্তু মৈথুন শক্তির
স্বল্পতা একটা প্রধান জিনিস। এটি দৈহিক ও মানসিক অবস্থার ওপর হয়ে থাকে। কারণঃ-
১। অধিক উত্তেজনা।
২। ঘন ঘন উত্তেজনা কিন্তু কম পরিমাণে।
৩। যখন উত্তেজনা আসে তখন স্ত্রীর সঙ্গে মৈথুন না করা।
৪। মৈথুনের সময় ভয়, লজ্জা ও কোন বাধা।
৫। বহুদিন বাদে মৈথুন করা।
৬। হস্তমৈথুন করা।
৭। দৈহিক অসুস্থতা।
৮। জন্মগত দুর্বলতা।
৯। যৌন ব্যাধি ইত্যাদি।
প্রতিকার - শীঘ্র পতন,
যৌন ব্যাধি, জন্মগত দুর্বলতা ইত্যাদি
বিষয়ে এর পরে আলোচনা করা হয়েছে। প্রত্যেক রোগের কি ঔষধ তাও বলা হয়েছে।
নেশা
সেবন
কোন প্রকার নেশা করা
অবশ্যই অনুচিত বলে শাস্ত্রে বর্ণিত হয়েছে। তবে কিছু সংখ্যক লোক মৈথুন শক্তি
বাড়াবার মত কিছু কিছু নেশা করে থাকেন। তবে নেশা যদি সামান্য হয় অর্থাৎ তাতে যদি
ঠিক পুরা মাদকতা না আসে, অথচ যৌন ক্ষমতা যদি সামান্য বৃদ্ধি
পায়, তবে তা নিশ্চয়ই উপকারী। নেশায় যে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ঠিক তা নয়, নেশা বীর্যকে
কিছুটা শুকিয়ে গাঢ় করে দেয়, তাই কিছুটা বেশী সময় ধরে
মৈথুন করা চলে।
শাস্ত্রের মতে মাদক
দ্রব্য অল্প পরিমাণে অবশ্য ইন্দ্রিয় শক্তি ও দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি
ঔষধের সাথে ব্যবহার করা হয়। যেমন- (১) এ্যালকোহল। (২) সিদ্ধি। (৩) আফিং ইত্যাদি কিন্তু
পরিমাণে তা ব্যবহৃত হয় খুব কম, ঠিক মাত্রা অনুযায়ী। কিন্তু
লজ্জাশালী রমণী স্বামীর এ প্রস্তাব প্রকারান্তরে প্রত্যাখ্যান করে। এতে স্বামী
অবশেষে মনঃক্ষুন্ন হয় এবং বেশ্যালয়ে যাওয়া শুরু করে। পেটের দায়ে যারা এ বৃত্তিকে
স্বেচ্ছায় বরণ করে নিয়েছে, পয়সা রোজগারের জন্য যত নগ্ন ও
গর্হিত কাজই হোক না কেন, এরা তা করে। আর একটা কথা,
সাধারণ খাদ্য পানীয় দ্বারা যতটা সম্ভব ততটা যৌন ক্ষমতা আগে
বাড়াবার চেষ্টা করা উচিত। তারপর অবশ্য ঔষধ। ঔষধের চেয়ে বেশী মাত্রায় নেশা ভাল নয়।
যৌন ইন্দ্রিয়ের অক্ষমতা
যৌন ইন্দ্রয়ের অক্ষমতা
হল সফল মৈথুনের আর একটা প্রধান অন্তরায়। মৈথুন শক্তির অক্ষমতা আর যৌন
অক্ষমতার কারণ কিন্তু ঠিক এক নয়। মৈথুন শক্তির অক্ষমতা সক্ষম ইন্দ্রিয় শক্তি
থাকলেও হতে পারে কিন্তু অনেকের ইন্দ্রিয় আবার ঠিক তার মত দৃঢ় হয় না। আর ইন্দ্রিয়
দৃঢ় না হলে মৈথুন ক্ষমতা স্বাভাবিক হয় না। এর প্রকৃত কারণ কি, এ বিষয়ে
নানা আলোচনা আগে করা হয়েছে, এখনও করা হবে। ইন্দ্রিয় উত্তেজিত না
হবার কারণ হল অবশ্য শারীরিক দুর্বলতা। কিন্তু তা আসে কেন?
১) অমিতাচার।
২) জন্মগত অক্ষমতা।
৩) যৌন ক্ষমতার অভাব।
৪) হস্তমৈথুনের অভ্যাস ইত্যাদি।
যাই হোক যৌন ইন্দ্রিয়ের
অক্ষমতা উপযুক্ত চিকিৎসক দ্বারা অবশ্যই চিকিৎসা করানো দরকার। তা না হলে যৌন
ইন্দ্রিয়ের ক্রমশ আরও মারাত্নক হয়ে অন্য রোগের সূচনা করতে পারে।
অযোগ্য
স্ত্রী
স্ত্রী মৈথুনে অযোগ্য
হয় কেমন করে? এর উত্তর হল, মৈথুনের উপযুক্ত
ভাবে সহায়ক না হলে সেই স্ত্রীকে অযোগ্য বলা হয়। স্ত্রী অযোগ্য কি করে হতে পারে।
১। মৈথুনে অনাসক্তি।
২। উপযুক্ত শ্রেণী হিসাবে মিল না হবার জন্য মৈথুনে অক্ষমতা, যেমন বৃষ বা অশ্ব জাতীয় পুরুষের সাথে পদ্মিনী জাতীয় স্ত্রীর।
৩। দৈহিক গঠনের জন্য মৈথুনে অতৃপ্তি।
৪। লজ্জা ও ভয় ইত্যাদি কারণে স্বামীর সঙ্গে মৈথুনে লিপ্ত না হতে ইচ্ছা।
৫। হৃদয়ে প্রেমের অভাব।
৬। গোপন প্রণয়ী - স্বামীর প্রতি আসক্তি বা প্রেমের অভাব।
এর জন্য উপযুক্ত
ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মানসিক হলে তার জন্য স্ত্রীকে ভালোবেসে তার হৃদয় জয় করতে
হবে। দৈহিক হলে, চিকিৎসার প্রয়োজন। নারী পুরুষ উভয়েই সমশ্রেণীর না হলে
মৈথুনকালীন বিবিধ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এই অসুবিধাই হল অসফল মৈথুন।
মৈথুনে
অন্যান্য অসুবিধা
সফল মৈথুনের অন্যান্য
অসুবিধা হল-
(১) আর্থিক অস্বচ্ছলতা।
(২) যোগ্য স্থানের অভাব।
(৩) খাদাদির অভাব ও দৈহিক দুর্বলতা ইত্যাদি।
একথা অবশ্যই ঠিক যে
সুবিধাজনক সময়, স্থান, খাদ্যদির অভাব হলে মৈথুন
সফল হতে পারে না। কোন গরীব বা অভাবী লোক আগে খাদ্যের যোগাড় করবে তারপর মৈথুন। এখানে
আর একটি প্রয়োজনীয় কথা হল, প্রাচীন শাস্ত্র কারক বলেছেন
যে সফল মৈথুন নর-নারীর আনন্দ প্রাপ্তির উৎস তা ঠিক, সফল
মৈথুন না হলে, হৃদয়ে পূর্ণ আনন্দ প্রাপ্তি না হলে উপযুক্ত
সন্তান হয় না। অসফল মৈথুনে যে সন্তান হয়, তা জাতির
প্রতিবন্ধক স্বরূপ। সফল মৈথুনই প্রকৃত সন্তানের জন্ম দেয়।
অবশেষে একটি প্রধান কথা
হল,
মৈথুন যত কম হয় তত ভাল, তাতে রতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
ও সফল মৈথুনের জন্য দেহ, মনকে শক্তি সঞ্চয়ী করে তোলে।